Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
নীলসাগর
স্থান

নীলফামারী সদর উপজেলাধীন গোড়গ্রাম ইউনিয়ন

কিভাবে যাওয়া যায়

গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গায় অবস্থিত নীলসাগরে নীলফামারী থেকে সড়কপথে বাস, ইজিবাইকযোগে যাওয়া যায়।

বিস্তারিত

নীলফামারী  জেলা  শহর থেকে উত্তর-পশ্চিমে ১৪.৫ কিলোমিটার দূরে সদর  উপজেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা মৌজায়  নীলসাগর দীঘি  অবস্থিত। মোট আয়তন ৫৩.৯০ একর, মূল দীঘি ৩২.৭০ একর। আনুমানিক খননকাল অষ্টম শতাব্দীর কোন এক সময়ে। হিন্দুশাস্ত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম হতে নবম শতাব্দীতে কুরুক্ষেত্রের  যুদ্ধে  বিরাট  রাজা  পান্ডবদের  এবং  রাজা ভগদত্তকৌরবের  পক্ষ অবলম্বন করে  যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। কৌরব  এবং  পান্ডবদের পাশা  খেলা হয়। খেলার শর্ত অনুযায়ী  পরাজিত হয়ে  পান্ডবরা বারো বছরের জন্য বনবাসে যেতে বাধ্য  হয়।পরাজিত পান্ডবরা  বিরাট রাজার রাজ্যভূক্ত গোগৃহে (কথিত আজকের গোড়গ্রাম) স্বেচ্ছা নির্বাসনের স্থান মনোনীত  করেন।পান্ডবদের  তৃষ্ণা  মেটাবার  জন্য  বিরাট রাজা তখন এই বিশাল দীঘিটি খনন করেন। বিরাট দীঘি অপভ্রংশের  মাধ্যমে কালক্রমে “বিরাটদীঘি”, “বিল্টাদীঘি” এবংঅবশেষে“ বিন্নাদীঘি” হিসেবে পরিচিতি পায়। ১৯৭৯ সালে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক জনাব আঃ জব্বার এ দীঘিকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সংস্কারের   পাশাপাশি এর নামকরণ করেন “নীলসাগর”। পানির   গভীরতা  মাঝে ২৩ ফুট (জুন-অক্টোবর),পাড় ঘেষে ০৪ ফুট।

 

ভূমি মন্ত্রণালয়“নীলসাগর দীঘি উন্নয়ন ও পাখির অভয়ারণ্য প্রকল্প নামে৮০.০৫ লক্ষ টাকারএকটি প্রকল্প হাতে নেয়। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল জুলাই ১৯৯৮ খ্রি: হতে জুন ২০০১ খ্রি:। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিলদীঘিকে আকর্ষনীয় ও নিরাপদ স্থান হিসাবে পর্যটনের জন্য গড়ে তোলা এবং  সর্বোপরি অতিথি পাখির অভয়ারণ্য সৃজন করা, দীঘির পাড়ে দেশী ও বিরল প্রজাতির বিভিন্ন বৃক্ষ রোপণ ও সংরক্ষন করা, দীঘিকে চিত্তবিনোদন ও অবকাশ যাপনের স্থান হিসাবে গড়ে তোলাএবংমাছ চাষের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি করা। প্রকল্প শেষেবর্তমানে জেলা প্রশাসককে সভাপতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কে সদস্য সচিব করেজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নিয়ে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট ‘দীঘি ব্যবস্থাপনা কমিটি’ র তত্ত্বাবধানে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।  দীঘির আয়ের প্রধান উৎস দর্শনার্থী ও যানবাহন প্রবেশ ফি এবংরেস্ট হাউজ ভাড়া, মৎস্য এ্যাংলিং, জলসেচ, ফল ইজারা ইত্যাদি। প্রবেশ ফি দর্শনার্থী-১০/-, বাইসাইকেল-১০/-, মোটর সাইকেল-৫০/-, কার/মাইক্রো/জীপ-১০০/-, মিনিবাস/বাস-২০০/- এবং মৎস্য এ্যাংলিং-১,৫০০/- (দুই ছিপ)। রেস্ট হাউস ভাড়া ১৫০০/- (ভিআইপি), ১,২০০/- (সেমি ভিআইপি), ১,০০০/-(সাধারন)। চিত্ত বিনোদনের জন্য রয়েছে ঘোড়ার গাড়ী, নাগরদোলা, স্লিপার, দোলনা ইত্যাদি। বর্তমানে দীঘিতে দৈনিক হাজিরা (কাজ নাই, মজুরী নাই) ভিত্তিক ০১ জন কেয়ার টেকার এবং ০৪জন পাহারাদার-কাম-মালি কর্মরত রয়েছে।  প্রতিবছর অক্টোবর-এপ্রিল মাস পর্যন্ত  নীলসাগরে অসংখ্য অতিথি (সাইবেরিয়ান) পাখির আগমন ঘটে এবং সারাক্ষণ তাদের কলকাকলীতে পরিবেশ উচ্ছল হয়ে অঠে এবংদর্শনার্থীদের মন ভরে উঠে। অক্টোবর-১৩ এপ্রিল পর্যন্ত এখানে (অতিথি পাখির আগমন উপলক্ষে) মৎস্য এ্যাংলিংবন্ধ থাকে।

 সম্প্রতি নীলসাগরের রেস্ট হাউস দ্বিতল করন ও কক্ষে শীততাপ যন্ত্র স্থাপন, বাউন্ডারী ওয়াল উচুকরন, দীঘির চতুর্দিকে পাকা রাস্তা নির্মাণ/ মেরামত, দীঘির সুরক্ষা প্রাচীর নির্মান ইত্যাদি উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে অধিকতর আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।